Book Name:Surah Fatiha
বিশেষভাবে ভালোবাসতেন, আপাতদৃষ্টিতে ঐ গোলামের মধ্যে বিশেষ কোনো ব্যাপার ছিলো না, তবুও বাদশাহ তাকে খুব পছন্দ করতেন, অন্যান্য গোলামদের জন্য এ ব্যাপারটি খুবই পীড়াদায়ক ছিলো। একবার সেই গোলামরা সাহস করে বাদশাহর দরবারে বলেই ফেলল: হে মহান বাদশাহ, এই গোলামের মধ্যে কী এমন বিশেষত্ব আছে যে, আপনি তার প্রতি এতই মেহেরবান? বাদশাহ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার পরিবর্তে বললেন: আমাদেরও সামনে একটি সফর আছে, প্রস্তুতি নাও, আমরা সফরে বের হবো। সুতরাং ঘোড়াগুলো প্রস্তুত করা হলো এবং বাদশাহ তার গোলামদের সাথে নিয়ে যাত্রা শুরু করলেন। সে ছিলো পাহাড়ি এলাকার সফর। কিছু দূর যাওয়ার পর একটি পাহাড় দেখা গেলো, যা ছিলো বরফে ঢাকা। বাদশাহ দূর থেকে সেই পাহাড়টি দেখতে পেলেন এবং মাথা নিচু করে ফেললেন। বাদশাহ মাথা নত করার সাথে সাথে বাদশাহর প্রিয় গোলাম ঘোড়ার গতি বাড়ানোর জন্য পদাঘাত করলো (অর্থাৎ দৌঁড়ে সামনে চলে গেলো)। সবাই হতভম্ব হয়ে গেলো যে, তার কী হয়েছে? সে যাচ্ছে কোথায়? কিছুক্ষণ পর ঐ গোলাম হাতে বরফ নিয়ে ফিরে এলো, বাদশাহ জিজ্ঞেস করলেন: এই বরফ কেন এনেছো? সে বললো: মহান বাদশাহ, আপনি সেই বরফের পাহাড়ের দিকে তাকালেন, তারপর মাথা নিচু করে ফেললেন, আমি জানি আপনি অকারণে তা করেন নি, আমি বুঝে গেলাম যে, মহান বাদশাহ বরফ চাইছেন। একথা শুনে বাদশাহ তার গোলামদের সম্বোধন করে বললেন: দেখো, তোমরা সবাই নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত, তোমাদের মনোযোগ নিজের দিকে থাকে, কিন্তু আমার এই গোলামের মনোযোগ সর্বদা আমার দিকে থাকে, আমি কী দেখছি, কী করছি, আমার দৃষ্টি কোথায় উঠছে সে এগুলোর প্রতি খেয়াল রাখে, যে কারণে আমি তাকে বেশি ভালোবাসি।
(রিসালায়ে কুশাইরিয়া, ২২৫ পৃষ্ঠা)
প্রিয় ইসলামী বোনেরা! এর নামই হলো ধ্যান, * আমাদের মনোযোগ সর্বদা তার রবের দিকে থাকা। * আমরা বাইরে থাকলে সেখানেও আমাদের মনোযোগ রবের দিকে থাকা, * আমরা ঘরে থাকলে সেখানেও আমাদের মনোযোগ রবের দিকে থাকা, মোটকথা সর্বাবস্থায় সর্বক্ষেত্রে মুসলমানের মনোযোগ কেবল আল্লাহ পাকের দিকেই থাকা, এটাই হলো ধ্যান।