Qayamat Ke Din Ke Gawah

Book Name:Qayamat Ke Din Ke Gawah

          প্রিয় ইসলামী বোনেরা! কিয়ামতের এ পর্যায়ও চরম কষ্টের সাথে অতিবাহিত করতে হবে। আল্লামা ইবনে জাওযী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ লিখেন: কিয়ামতের দিন যখন বান্দাকে আমলনামা দেয়া হবে, তারা দেখবে যে, এতে সবচেয়ে ছোট গুনাহও লিপিবদ্ধ রয়েছে, তখন বান্দা তার মাথা নত করে নেবে আর তখন তার লজ্জায় মাটিতে মিশে যাওয়ার মতো অবস্থা হবে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করবেন: হে আমার বান্দা! মাথা তোলো...! তুমি কি এ গুনাহ সম্পর্কে জানো? বান্দা আরয করবে: মালিক, তোমার সম্মান ও মহত্বের শপথ! আমি এ সম্পর্কে জানি। আল্লাহ পাক বান্দাকে ইরশাদ করবেন: বান্দা! তোমার কি স্মরণে আছে, অমুক দিন, অমুক সময়, অমুক জাগায় তুমি এই গুনাহ করেছিলে? বান্দা স্বীকার করবে। আল্লাহ পাক ইরশাদ করবেন: তুমি মানুষের কাছে গোপন করে গুনাহ করছিলে কিন্তু তুমি তো জানতে যে, আমি দেখছি। আমার ব্যাপারে কি তোমার তখন লজ্জা হয়নি? তুমি কি জানতে না তোমাকে আমার নিকট প্রত্যাবর্তন করতে হবে? তখন বান্দা কোনো উত্তর দিতে পারবে না, তার লজ্জায় মাটিতে মিশে যাওয়ার মতো অবস্থা হবে, সে নিজেকে ঘৃণা করবে এবং ঘাবড়ে গিয়ে আরয করবে: মাওলা! তুমি আমাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে দাও, এ শাসন ও লজ্জার তুলনায় জাহান্নামে যাওয়া আমার জন্য সহজতর। (বুস্তানুল ওয়াতিন, পৃষ্ঠা- ৮৯)

(৬) ষষ্ঠ সাক্ষী আমাদের অঙ্গসমূহ

          কিয়ামতের দিন ষষ্ঠ সাক্ষী হবে আমাদের অঙ্গসমূহ। আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন:

 

یَّوْمَ تَشْہَدُ عَلَیْہِمْ اَلْسِنَتُہُمْ وَ اَیْدِیْہِمْ وَ اَرْجُلُہُمْ بِمَا کَانُوْا یَعْمَلُوْنَ (۲۴)

(পারা ১৮, সূরা নূর, আয়াত ২৪)                  কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: যে দিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে তাদেরই রসনাগুলো, তাদের হাতগুলো ও তাদের চরণগুলো যা কিছু তারা করতো সে সম্বন্ধে।

 

          হযরত আল্লামা মাহমুদ আলুসী رَحْمَۃُ اللهِ عَلَیْہِ এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেন: কিয়ামতের দিন আল্লাহ পাক আমাদের অঙ্গসমূহকে বাকশক্তি দান করবেন। অতঃপর প্রত্যেক অঙ্গ বান্দার ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবে যে, তারা এ অঙ্গগুলো দিয়ে কী কাজ করিয়েছে।

(তাফসীরে রুহুল মাআনী, পারা ১৮, সূরা নূর, ২৪ নং আয়াতের পাদটিকা, ১৮তম অধ্যায়, ৯/৪৪২)

 

          আহ! আফসোস! একটু চিন্তা করুন! কীরূপ ভীতিকর অবস্থা হবে যে, কিয়ামতের দিন আমাদের অঙ্গসমূহ আমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে। পা বলবে: মাওলা! এই ব্যক্তি অমুক দিন, অমুক সময়, অমুক গুনাহের স্থানে গিয়েছিলো। হাত বলবে: মাওলা! এই ব্যক্তি আমাকে হারাম আহার করা ও হারাম কাজে ব্যবহার করেছে। চোখ বলবে: মাওলা! এই ব্যক্তি আমার মাধ্যমে কুদৃষ্টি দিতো, সিনেমা নাটক দেখতো। কান সাক্ষ্য দিবে: মাওলা! সে আমার মাধ্যমে গান-বাজনা শুনতো, অশ্লীল কথা শুনে মজা পেতো। মুখ বলবে: মাওলা! সে আমার মাধ্যমে গীবত করতো, মিথ্যা বলতো, চোগলখুরী করতো, অভিশাপ দিতো। আহ! ঐ সময় যখন আমাদের শরীরের অঙ্গগুলো আমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিবে, তখন আমরা নিজেকে কীভাবে রক্ষা করবো? নিজের সাফাই দেয়ার জন্য আমরা কোন অজুহাত উপস্থাপন করবো?

 

          আহ! প্রিয় ইসলামী বোনেরা! এই জমিন, এই দিন ও রাত, আমল লেখক ফিরিশতা, এমনকি আমাদের অঙ্গসমূহ, আমাদের চোখ, মুখ, কান, হাত, পা সব কিছুই আমাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবে। তো বলুন নাজাতের কী উপায় হবে? কোনো অজুহাত কি আমাদের নিকট অবশিষ্ট